ঈদজাতীয়দিবসধর্ম ও জীবনলিডসারাবাংলা

পবিএ ঈদুল আজহা উপলক্ষে ব্যস্ত সময় কামারদের

চাহিদা বেড়েছ কোপা,বটি,ছুরি সহ কুরবানির সরঞ্জাম

বাংলার রাজপথ ডেস্ক

হাতছানি দিয়ে ডাকছে পবিত্র ঈদুল আজহা। আগামী ২৯ জুন পালিত হবে ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত পবিত্র ঈদুল আজহা ইনশাআল্লাহ। ঈদুল আজহা প্রতিষ্ঠিত মূলত কোরবানির জন্য। সামর্থ্যবান মানুষের এই দিন তাদের পছন্দের পশুকে মহান আল্লাহর খুশির জন্য কুরবানী করে থাকেন। তাই সকলেরই প্রয়োজন পরে কুরবানী দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম।
বিশেষ করে পবিএ ঈদুল আজহায় চাহিদার তুঙ্গে থাকেন কামাররা। টুংটাং শব্দে দিনরাত ব্যাস্ত সময় পার করচ্ছেন বর্তমানে তারা। যেন শ্বাস ফেলার সময় নাই। মানুষ তাদের গত বছরের ব্যবহার করা কুবা, ছুড়ি, দা,বটি, ছোট চাকু সহ অনান্য সামগ্রী তুলে রাখলেও আবারও সেগুলো সান ( ধার) করানোর প্রয়োজন হচ্ছে। তাই কামারদের কাছে আসতেই হচ্ছে।
গাজীপুরের জয়দেবপুর বাজারের কামার দোকানগুলো এখন বেশ জমজমাট বানিজ্য করছে। ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকেই এক দিন সময় হাতে নিয়ে তারা ধার দিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু কোবা বা ছুড়ি ধার দিতে দাম কিছুটা বেশি নিচ্ছে বলে অভিযোগ থাকলেও অনেকে বলছেন ঠিক আছে। কোবা ধার করতে নিচ্ছেন ১৩০-১৫০ টাকা, বড় ছুড়ি ১০০-১২০ টাকা, ছোট চামড়া কাটার ছুড়ি গুলো ধার করানোর জন্য দিতে হচ্ছে ৫০ টাকা করে।
আর যদি নতুন করে কিনতে চান তাহলে ভালো কোবা ৮০০- ১২০০ টাকা পর্যন্ত, বটি ২৫০ – ৫০০ পর্যন্ত আছে, ছোট ছুরি ৮০-২৫০ টাকা।
জয়দেবপুর বাজারের এক ব্যবসায়ির সাথে কথা বললে তিনি জানান, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে অনেক আগে থেকেই কুরবানির সাথে সম্পৃক্ত জিনিসগুলো কেনা শুরু হয়। কিন্তু বেশি চাজ থাকে ঈদের চার পাঁচদিন আগে থেকে। তখন সমস্ত কোবা চাকু বটি ধার করানোর জন্য আসতে হয়। আর আমাদেরও ব্যাস্ত সময় পার করতে হয়।
কিভাবে আসলো কুরবানীর আদেশ–

মানব ইতিহাসে প্রথম কুরবানির দাতা হলেন হযরত আদম ( আঃ) এর দুই পুএ হাবিল ও কাবিল। এ বিষয়ে পবিএ আল কুরআনে হাবিল ও কাবিলের উল্লেখ পাওয়া যায়। হাবিলই প্রথম মানুষ যে আল্লাহর উদ্দেশ্য একটি ভেড়া কুরবানি করেছিলো। ইবনে কাসির বর্ননা করেন যে, হাবিল একটি সুন্দর পুষ্ট ভেড়া এবং কাবিল তার কিছু ফসল আল্লার উদ্দেশ্য নিবেদন করেন। তখনকার নির্ধারিত পদ্ধতি ছিলো আকাশ থেকে আগুন নেমে আসবে এবং সেই আগুনে গ্রহণযোগ্য কুরবানী গ্রহন করবে। তখন আকাশ থেকে আগুন নেমে হাবিলের ভেড়াকে গ্রহন করে এবং কুরবানী হিসেবে গ্রহীত হয়। কিন্তু কাবিলের ফসল কুরবানী হিসেবে প্রত্যাখিত হয়। সেই ঘটনূয় কাবিল সামাজিক ভাবে অপমানিত বোধ করেন এবং রাগের মাথায় একসময় তার ভাই হাবিলকে হত্যা করেন। যেই হত্যাকান্ড মানব ইতিহাসের সর্বপ্রথম হত্যা হিসেবে পরিচিত।
তারপর বহু সময় পরে ইসলামের বিভিন্ন বর্ননা অনুযায়ী মহান আল্লাহ তাআলা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) স্বপ্নে নির্দেশ করেন তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তুকে কুরবানী দেয়ার জন্য। এ স্বপ্ন দেখে হযরত ইব্রাহিম (আঃ) ১০ টি উট কুরবানি করেন। আবার একি স্বপ্ন দেখেন তিনি,, এবার ১০০ টি উট কুরবানি করা হয়। কিন্তু আবারও যখন একি স্বপ্ন দেখেন তখন তিনি ভাবলেন যেহুতে আল্লাহর দরবারে কবুল হচ্ছেনা। আমার প্রিয় বস্তুর কথা বলছে বারবার, তাহলে আমার সবচেয়ে প্রিয় তো হলো আমার পুএ ইসমাইল( আঃ)। তখন তিনি পুএ ইসমাইল (আঃ) সমস্ত কিছু খুলে বললেন এবং তার সম্মতিতে আরাফাতের ময়দানে রওয়া হলেন পুএ ইসমাইলকে কুরবানির জন্য। তারপর আরাফাতের পর্বতের উপর রেখে গলায় যেই ছুড়ি চালালেন তখনি আল্লাহর নির্দেশে ইসমাঈলের জায়গায় অলৌকিক ভাবে একটি পশু কুরবানী হয়ে যায়। ইসমাইল ( আঃ) কোন ক্ষতিই হয়নি। সেই ঘটনাকে স্বরন করে সমস্ত বিশ্বের মুসলমানেরা মহান আল্লার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ঈদুল আজহায় পশু কুরবানী করে থাকেন। আল্লাহ আমাদের সকলের কুরবানী কবুল করে নিক।

Related Articles

Back to top button