ভোলায় লকডাউনের নামে চলছে চোর পুলিশ খেলা
করোনা মহামারি সামালাতে গত ২৩ জুলাই থেকে দ্বিতীয় দফা কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার৷
করোনার ঊর্ধ্বগতিতে টানা দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে।
জরুরি সেবা ছাড়া বাকি সবকিছুই বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। কিন্তু ভোলায় ব্যবসায়ী আর প্রশাসনের মধ্যে চলছে লুকোচুরির খেলা। যেন এই লকডাউনের মাথা ব্যথা শুধুই প্রশাসনের। ব্যাবসায়ী বা ক্রেতা কারোই কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।
ম্যাজিস্ট্রেট আসলেই দোকানের মধ্যে বেচাকেনা অবস্থায় কাস্টমারসহ সাটার নামিয়ে ফেলা হচ্ছে। আবার চলে গেলেই খুলে যাচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো।
লকডাউন নয়, এ তো যেন এক প্রকার চোর পুলিশের খেলা। সামনে দিয়ে সাটার বন্ধ থাকলেও, পিছন দিয়ে খোলা রেখেই চলছে বেচাকেনার ।
তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ছাড় দেয়া হচ্ছে না । নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেচাকেনার দায়ে ইতিমধ্যেই অনেক ক্রেতা-বিক্রেতাকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
ভোলা শহরের চকবাজার, খালেক ম্যানশন, মহাজন পট্টি, ওয়েষ্টার্ন পাড়া, জিয়া মার্কেট, হক মার্কেট, ঘোষপট্টি ও সদর রোড ঘুরে দেখা যায় বেশীরভাগ দোকানই অর্ধেক সাটার খোলা। সেখানেই চলছে বেচাকেনা দেদারসে, কিন্তু পুলিশ বা ম্যাজিস্ট্রেট আসলেই বন্ধ করে ফেলা হয় সাটার।
কোনো কোনো দোকানের মধ্যে ক্রেতা রেখেই বাহির থেকে বন্ধ রাখার ঘটনা পাওয়া গেছে। বন্ধ থাকা প্রতিটি দোকানের সামনে একজন করে লোক দাড়িয়ে আছেন। পথচারীর ইশারা বুঝতে পারলে সাটার অল্প তুলে তাকে দোকানের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হয়।
তবে এসব বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ছাড় দেয়া হচ্ছে না এবং হবে না বলে জানায় দায়িত্বে থাকা আইনশৃংখলা বাহিনী।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে দোকানের সাটার বন্ধ করে বেচাকেনার দায়ে কয়েকজন ব্যবসায়ী ও ক্রেতাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অপরদিকে লকডাউনের কারণে লঞ্চ, সিট্রাকসহ সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও থেমে নেই যাত্রী পারাপার। লকডাউন অমান্য করে ও প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়েই চলছে স্প্রিড বোট, ট্রলার।
স্বাভাকিক সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া নিয়ে এসব নৌযান ভোলা লক্ষ্মীপুর রুটের ডেঞ্জার জোনে যাত্রী পারাপার করছে। যদিও মাঠে রয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ র্যাব পুলিশের টহল। এরপরও থেমে নেই এসব অনিয়ম। এ যেন লকডাউনে আরেক লুকোচুরির খেলা।
তবে ইলিশা ঘাট এলাকা থেকে সোমবার সকালে পুলিশ অবৈধ ট্রলার পরিচালনা চক্রের দুই হোতাকে আটক করেছে বলে জানিয়েছেন ভোলা সদর থানা সূত্র।
এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে ও লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে থাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রিদওয়ানুল ইসলাম জানান, সরকারি বিধি-নিষেধ বাস্তবায়নে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
তিনি আরো জানান, শহরের সবগুলো প্রবেশ পথে চেক পোস্ট বসানো হয়েছে, যাতে যৌক্তিক প্রয়োজন ছাড়া কেউ শহরে প্রবেশ করতে না পারেন। আমরা মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছি, তারা যেন এই বিধিনিষেধ মেনে চলেন।