ঢাকাসারাবাংলা

গাজীপুরে স্টাইল ক্রাফটের আংশিক বেতন প্রদান এবং অনান্য প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা জোরদার

মন্ত্রী, মেয়র ও জেলা প্রশাসকের যৌথ উদ্যোগ

নিউজ ডেস্কঃ

বিভিন্ন বকেয়া পাওনার দাবীতে লক্ষ্মীপুরা, গাজীপুর মহানগরস্থ স্টাইল ক্রাফট লি: এর শ্রমিক ও স্টাফরা বিগত ১ সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চলমান রাখে। এ সময় প্রতিদিন ১০-১২ ঘন্টা সড়ক অবরোধসহ নানা রকম আন্দোলন তারা করে। শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে জেলা প্রশাসন, গাজীপুর এর প্রতিনিধি ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরী, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, গাজীপুর ঘটনাস্থলে প্রতিদিন সার্বক্ষণিকভাবে অবস্থান করে জেলা প্রশাসক, গাজীপুর মহোদয়ের নির্দেশনার আলোকে কাজ করেন।
এসময় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, শিল্প পুলিশ, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং বিজিএমইএ এর প্রতিনিধি ও সদস্যগণও একই সাথে সমন্বিতভাবে কাজ করেন।

প্রতিদিন সড়ক অবরোধ থাকলেও আন্দোলন থেকে কোন সহিংসতা যেন না হয় এবং পলাতক মালিককে কারখানায় ফিরিয়ে এনে নানাভাবে সমন্বিতভাবে চেষ্টা করা হয়।

তবে, ১৮/০৭/২০২১ তারিখ বিকালে আকস্মিকভাবে আন্দোলন উত্তপ্ত হয়ে উঠলে জননিরাপত্তা বিধানে জেলা প্রশাসন, শিল্প পুলিশ ও মেট্রোপলিটন পুলিশ শক্ত অবস্থান নিতে বাধ্য হয়। এসময় জননিরাপত্তা বিধানে ২০ রাউন্ড টিয়ার গ্যাস ও ১৬ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়, তবে কারো যেন বড় কোন ক্ষতি না হয় সেই বিষয়টি যথাযথভাবে নিশ্চিত করা হয়।

দীর্ঘ সময়ের সংকটের প্রেক্ষাপটে জনাব আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক, মাননীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, জনাব মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মেয়র, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, জনাব শামসুন্নাহার, মাননীয় সংসদ সদস্য বিভিন্ন সময়ে কারখানায় উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের দাবীর পক্ষে অবস্থান জানান।

মালিক পলাতক থাকায়, শ্রমিকদের নানা রকম খাত বাবদ পাওনা বকেয়া থাকায় এবং উক্ত প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নানা আইনি বাধা বিদ্যমান থাকায় তা নিষ্পত্তির জন্য জনাব এস. এম. তরিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক, গাজীপুর মহোদয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে জরুরিভাবে অবহিতকরণপূর্বক উক্ত কারখানার বিষয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যবযোগাযোগ অব্যাহত রাখছেন।

গতকাল সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি দপ্তরের নানামুখী প্রচেষ্টা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধির বদান্যতায় স্টাইল ক্রাফট লি: এর শ্রমিক ও স্টাফদের আংশিক পাওনা পরিশোধের টাকা রাত ২:৩০ টার দিকে সংগ্রহ হয়। এরপর ভোর ৫টার দিকে আংশিক পেমেন্ট সমাপ্ত হলে শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে যায়।

এছাড়া, গতকাল দীর্ঘ সংকটে থাকা ন্যাশনাল কেমিকেল লি: (বর্তমানে বেশ অনেক দিন ধরে বন্ধ) এর শ্রমিকদের আংশিক পেমেন্ট নিশ্চিত করা হয়েছে। উক্ত প্রতিষ্ঠানের সংকট নিরসনে জেলা প্রশাসক, গাজীপুর মহোদয় সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে সাথে নিয়ে সরকারের উর্ধবতন মহলের সহযোগিতায় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

এছাড়া, বিগত কয়েকদিনের মতো ১৯/০৭/২০২১ তারিখও গাজীপুর জেলার বহুসংখ্যক কারখানায় কোন না কোন পেমেন্ট ছিল। এর মাঝে কিছু কারখানায় মালিকের প্রেরিত অর্থ ব্যাংক থেকে কারখানায় আসতে দেরি হওয়ায় সড়ক অবরোধ, কর্ম বিরতিসহ অসন্তোষ হয়। শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনের জন্য জেলা প্রশাসন, গাজীপুর এর প্রতিনিধি সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে সমন্বয় ও যোগাযোগ রক্ষা করেন। পরবর্তীতে এসকল সমস্যাও সমাধান করা হয়।

এছাড়া, জেলা প্রশাসক, গাজীপুর মহোদয়ের নির্দেশনার আলোকে ঈদ পূর্ববর্তী শ্রমিকদের পেমেন্ট পরিশোধের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ ও সন্দেহজনক প্রতিষ্ঠানসমূহের তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্ত্রের সহায়তায় প্রস্তুত করা হয়। উক্ত তালিকাভূক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর তাই আগে থেকেই জেলা প্রশাসন, গাজীপুর এর প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর মিলে চাপ অব্যাহত রাখা হয়।
উক্ত তালিকার বেশকিছু প্রতিষ্ঠানে ১৯/০৭/২০২১ তারিখে পরিশোধযোগ্য পেমেন্টসমূহ পরিশোধ নিশ্চিতকরণে জনাব এস.এম. তরিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক, গাজীপুর মহোদয়ের নির্দেশনায় শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরী, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর তথা শিল্প পুলিশ, গাজীপুর, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা পুলিশ, গাজীপুর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, গাজীপুর, বিজিএমইএ এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সাথে সমন্বয় করে সার্বিক মনিটরিং ও যোগাযোগ অব্যাহত রাখে এবং এর ধারাবাহিতায় এসকল কারখানায় সকল পেমেন্ট পরিশোধ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।

Related Articles

Back to top button